ওয়েব ডেস্ক: কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কালবৈশাখীর আঘাতে গাছপালা এবং বাড়ি-ঘর ভেঙে পড়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও শতাধিক মানুষ।
এদিকে রাত জেগে জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি ঘুরে দেখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গেও কথা বলেন। জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ির যে যে এলাকা রোববারের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব জায়গায় রাতেই গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিজে খতিয়ে দেখেছেন এবং পরিস্থিতি তদারকি করেছেন। সবকিছু শেষ করে যখন তিনি হোটেলে ফিরেছেন তখন রাত আড়াইটা বাজে। তিনি মালবাজারের চালসার একটি হোটেলে আছেন।
এদিকে জলপাইগুড়ির উদ্দেশে সোমবার ভোরেই রওনা দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ভোর ৬টার দিকে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বাগডোগরার পথে রওনা দেন তিনি। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পৌঁছে যান বাগডোগরায়। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে জলপাইগুড়ির ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল।
যারা এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, জলপাইগুড়িতে ঝড়ে প্রাণহানি ঘটেছে। অনেকে আহত হয়েছেন। আমি বেশ উদ্বিগ্ন। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সবাই একসঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করছেন। আমি ওখানে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব, মানুষের সঙ্গে কথা বলব। যা যা করা সম্ভব, করব।
তিনি বলেন, আমি নিজে পরিস্থিতির তদারকি করব। মানুষের সঙ্গে কথা বলব। তাদের অভিজ্ঞতার কথা শুনব। যা যা করা সম্ভব করব। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দফতরের সঙ্গেও আমি কথা বলব।’
রোববার আচমকা ঝড়বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে জলপাইগুড়ি শহর, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে রাতে জানান মুখ্যমন্ত্রী। যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে দু’জন জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা। একজন গোসালা মোড়ে এবং অন্যজন সেন পাড়ায় থাকতেন। আরও দু’জন ময়নাগুড়ির বার্নিশ এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। সবার বাড়িতেই রাতে গিয়েছিলেন মমতা। তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
ঝড়ের তাণ্ডবে বহু মানুষ জখম হয়েছেন। তারা কেউ কেউ জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কয়েকজনকে ভর্তি করানো হয়েছে শিলিগুড়ির হাসপাতালে। রাতেই হাসপাতালে গিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করেন মমতা।
রোববার রাতে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে মমতা বলেন, রাজ্য সরকার পাশে আছে। এখন যেহেতু এমসিসি চলছে, তাই প্রশাসন যা করার করবে। রাতে তিনি আরও জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য প্রশাসন যা করার করছে। ত্রাণ সরবরাহের কাজ চলছে। এছাড়া জেলা ও ব্লক প্রশাসন, পুলিশ, ডিএমজি এবং কুইক রেসপন্স টিম বিপর্যয় মোকাবিলায় কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাত জেগে সেই কাজের তদারকিও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই।